ভাষা ও সংস্কৃতি
প্রাচীন কালে চীনা পরিব্রাজক যখন বাংলাদেশ ভ্রমন করেন তখন সারা বাংলায়আর্য ভাষারপ্রচলন হয়। ভাওয়ালেও তখন আর্য ভাষাসুপ্রতিষ্ঠিত হয় । বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাlv নামকগবেষণা গ্রন্থে বিশিষ্ট লেখক ডঃহুমায়ুন আজাদ বর্ণনা করেছেন আঠারো শতকেরত্রিশের দশকে ঢাকার ভাওয়ালে বসে পর্তুগীজপাদ্রি ম্যানুয়েলদা আসসম্পসাও রচনা করেছিলেন বাংলার দ্বিভাষিক অভিধান ও খন্ডিতব্যকরণ কাজটিনাগরীর গীর্জাতে বসে সম্পন্ন করেছেন। ভাওয়ালের কথ্য ভাষায় যা বাংলা একাডেমী ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়সহ সকল গবেষকরা স্বীকৃতি দিয়েছেন ।
আড়িয়া ইউনিয়নেরআঞ্চলিক ভাষার নমুনাঃ
অহনো এখনো কান্দস কাঁধ
অইলে হলে কতা কথা
বাংলাগদ্যের জন্মস্থান ভাওয়াল । বাংলা ভাষার ইতিহাসে আদি ও প্রথম গদ্যে রচিতপুস্তকটি ‘ব্রাষ্ফন রোমান ক্যাথলিক’ সংবাদ নামে বিশেষ পরিচিত ।
সংস্কৃতিঃ
ভাওয়াল সংগীতঃভাওয়াল জমিদারের পৃষ্ঠপোষকতায় ভাওয়াল সংগীত প্রতিষ্ঠা লাভ করে । বিশেষতঃসম্রাটআকবরের সভাসদ তানসেনের পুত্র বংশীয় রবাবীয়া, ধ্রুপদীয়াওওস্তাদকাশেম আলী খাঁ ভাওয়াল রাজবাড়ীতে সংগীতের চর্চা করে ভাওয়াল সংগীতকে প্রসিদ্ধ হতে সহায়তা করেন।
দোমঅন্থনির পালাগানঃ
অতীতেবাড়ীয়াঅঞ্চলে এ পালা গান প্রচলিত ছিল । ধর্ম প্রচারের জন্যগণমানুষদেরকথামালা নিয়ে এ পালাগান রচিত হত। ভাওয়ালের মানুষ ছিল পালাগান, জারী,সারি,ভাটিয়ালী গান প্রিয় । দোম অন্থনি দো রোজারিও এ পালগান রচনা করেনযা ধীরেধীরে ভাওয়াল ছাড়াও দেশে নানা স্থানে ছাড়িয়ে পড়ে ।
গাজীর গীত :
পূর্বেসমগ্র বাড়ীয়াঅঞ্চলে গাজীর গীতের প্রচলছিল । বাংলার সুলতান সিকান্দরশাহের প্রথম পুত্র গাজীর জীবন কাহিনী নিয়ে এই গীত রচিত হয়।
প্রাচীন পুঁথি সাহিত্যঃ
পুঁথি সাহিত্য এ অঞ্চলে পূর্বে খুবই জনপ্রিয় ছিল । সোনাবানের পুঁথি, মোছন্দালীরপালা, গাজীর পালা, গফুর বাদশা, বানেছা পরীর পালা, ভাওয়ালসন্যাসীর পালা প্রভৃতি এঅঞ্চলের উল্লেখযোগ্য পুঁথি সাহিত্য।
লোকজসংস্কৃতিঃ
ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের অলংকার শিল্প , আসন শিল্প , কাথা শিল্প, পাখা শিল্প, কাঠশিল্প ,মাদুরশিল্প, ধুপ শিল্প, খেজুর পাতার পাটি শিল্প ইত্যাদি কুটিরশিল্প প্রচলন রয়েছে ।
উৎসবঃ
বিভিন্নপার্বনে বিভিন্ন ধরণের উৎসব উদযাপিত হয় এবং মেলার আয়োজন করেন । বৈশাখমাসে বৈশাখী মেলা, হেমন্তে নবান্ন উৎসব,চৈত্র সংক্রান্তিতে মেলার আয়োজনকরা হয়।
ঘরবাড়ীঃ
ভাওয়ালগড় ইউনিয়নেরগ্রামাঞ্চলের মাটির দেয়ালের ঘর দেখতে পাওয়া যায় । তবে কিছু কিছু দালান-কোঠা রয়েছে ।
মেঘমাগা:
খরারমৌসুমে আল্লাহর কাছে মেঘ পার্থনার জন্য বয়স্ক, যুবক, কিশোর, শিশুরাসিংগা, ভাংঙ্গাকুলা, ভাঙ্গা হাড়ি,পাতিল ঢোল,ঝুড়ি, মুখোশ, বস্তা ইত্যদিনিয়ে সন্ধা থেকে রাত ২/৩টাপর্যন্ত সামান্য পানি নিয়ে কাদা করে মেঘের জন্যপ্রার্থনা করত। এই প্রার্থণাইঅঞ্চলিক ভাবে মেঘ মাগা বা মেঘমাঘনপ্রার্থ্যনা নামে পরিচিত। বহু পূর্ব হতে এই জেলায়মেঘমাগার প্রচলন চলেআসছে।